জিনা (ব্যভিচার) ইসলাম ধর্মে সবচেয়ে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ গুনাহগুলোর একটি।
এটি শুধু শারীরিক নয়— মানসিক, সামাজিক, পারিবারিক এবং আধ্যাত্মিক সব দিক থেকেই ধ্বংসাত্মক।
Islamic Light — Serious Warning
📖 কুরআনে জিনা সম্পর্কে কঠোর নিষেধ
وَلَا تَقْرَبُوا الزِّنَى إِنَّهُ كَانَ فَاحِشَةً وَسَاءَ سَبِيلًا
“জিনার কাছেও যেয়ো না।
নিঃসন্দেহে এটি অশ্লীল ও নিকৃষ্ট পথ।”
— (সূরা আল-ইসরা, ১৭:৩২)
লক্ষ করুন— আল্লাহ শুধু “জিনা কোরো না” বলেননি, বলেছেন
“জিনার কাছেও যেয়ো না”
অর্থাৎ জিনার দিকে ধাবিত হওয়ার সব মাধ্যমও হারাম:
❌ হারাম সম্পর্ক
❌ একান্তে মেলামেশা
❌ স্পর্শ
❌ ফ্লার্টিং
❌ অশ্লীল কথা
❌ হারাম মেসেঞ্জার চ্যাট
❌ দৃষ্টি-লালসা
⚠️ হাদিসে জিনা সম্পর্কে কঠিন সতর্কবার্তা
রাসুল ﷺ বলেছেন:
لَا يَزْنِي الزَّانِي حِينَ يَزْنِي وَهُوَ مُؤْمِنٌ
“যখন একজন ব্যক্তি জিনা করে, তখন সে সম্পূর্ণ মুমিন অবস্থায় থাকে না।”
— (সহিহ বুখারি, মুসলিম)
অর্থাৎ জিনা এমন এক গুনাহ যা ঈমানকে ভীষণ দুর্বল করে,
আল্লাহর নৈকট্য থেকে দূরে সরিয়ে দেয়।
আরো বলা হয়েছে —
إِذَا زَنَى الرَّجُلُ خَرَجَ مِنْهُ الْإِيمَانُ
“মানুষ যখন জিনা করে, তখন তার ওপর থেকে ঈমান সরে যায়।”
— (মুসনাদ আহমদ)
🔥 জিনার দুনিয়াবী ১০টি কঠিন ক্ষতি
- হৃদয় থেকে নূর ও ঈমান চলে যায়
- মানসিক অস্থিরতা, দুশ্চিন্তা ও বিষণ্ণতা
- পরিবার ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা
- সামাজিক লজ্জা ও সম্মানহানি
- হারাম সম্পর্কে মানসিক আসক্তি
- অবৈধ সন্তান জন্মের সম্ভাবনা
- STD/ যৌন রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি
- কারো ইজ্জত নষ্ট হলে তার দোয়া-অভিশাপ
- দাম্পত্য জীবনে অশান্তি
- হালাল সম্পর্কের প্রতি আগ্রহ কমে যাওয়া
🔥 আখিরাতে জিনার ভয়াবহ শাস্তি
রাসুল ﷺ বলেন:
الزُّنَاةُ يُحْبَسُونَ فِي تَنُّورٍ مِنْ نَارٍ يَصْعَدُونَ وَيَهْبِطُونَ
“জিনাকারীদেরকে একটি আগুনভরা চুল্লিতে রাখা হবে যেখানে তারা
উপরে উঠবে আবার নিচে পড়বে।”
— (সহিহ বুখারি — রুইয়া হাদিস)
এছাড়া কবরের শাস্তিতেও জিনা অন্যতম কারণ।
🛡 জিনা থেকে বাঁচার ১২টি শক্তিশালী উপায়
- ✔ চোখ হেফাজত
- ✔ অশ্লীলতা এড়িয়ে চলা
- ✔ মোবাইলে সেফ ফিল্টার ব্যবহার
- ✔ একান্তে বিপরীত লিঙ্গের সাথে কথা না বলা
- ✔ নেক সঙ্গ বেছে নেওয়া
- ✔ অধিক জিকির, কুরআন তিলাওয়াত
- ✔ নফস দুর্বল হলে একা না থাকা
- ✔ নফল রোজা রাখা — “রোজা হলো ঢাল” (হাদিস)
- ✔ হারাম উত্তেজক ভিডিও/সিনেমা পরিহার
- ✔ সময় মূল্যবান কাজে ব্যয়
- ✔ নিজের নফসকে নিয়ন্ত্রণের প্রশিক্ষণ
- ✔ বিবাহের উপযুক্ত হলে বিবাহ করা
🕊 তাওবা করলে কী হবে?
আল্লাহ বলেন —
إِلَّا مَنْ تَابَ وَآمَنَ وَعَمِلَ عَمَلًا صَالِحًا
فَأُولَئِكَ يُبَدِّلُ اللَّهُ سَيِّئَاتِهِمْ حَسَنَاتٍ
“যে তওবা করে, ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে —
আল্লাহ তার গুনাহগুলোকে বদলে নেকিতে পরিণত করে দেবেন।”
— (সূরা ফুরকান ২৫:৭০)
অর্থাৎ জিনা যত বড় গুনাহই হোক,
সত্যিকারের তাওবা করলে আল্লাহ তা মাফ করে দেন
এবং গুনাহকেও নেকিতে বদলে দেন।
← পেছনে যান (ইসলামী যৌন নীতি)